হবিগঞ্জ শহরের একটি বিপণিবিতানে ভ্যাট সংক্রান্ত মামলার ভয় দেখিয়ে একটি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টাকালে এক কাস্টমস কর্মকর্তা আটক হন। এই ঘটনা ঘটে গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকায় অবস্থিত এসডি প্লাজা নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। সেখানে উপস্থিত থাকা ব্যবসায়ীর ছেলে শুভ দাসের কাছ থেকে ওই কর্মকর্তা পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা ঐ কর্মকর্তা শামীম আল মামুনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। তবে, অভিযোগ না পাওয়ার কারণে পুলিশ তাকে সন্ধ্যায় মুক্তি দেয়।
ভ্যাট কর্মকর্তা শামীম আল মামুন হবিগঞ্জ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে তিনি এসডি প্লাজায় গিয়ে ভ্যাটের কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে ব্যবসায়ী শুভ দাসকে ভয় দেখান এবং পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এই ঘটনা নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হলে দোকানে উপস্থিত ক্রেতারা প্রতিবাদ জানান এবং হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে আটক করেন।
পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতা থেকে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে যায়। সেখানেই তাকে বেলা তিনটা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে, অভিযোগ না থাকায় শামীম আল মামুনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শামীম আল মামুন কিছুদিন আগে একইভাবে শহরের অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভ্যাটসংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে হয়রানি করেছিলেন এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করেছিলেন।
এদিকে, হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা পুলিশে মৌখিক অভিযোগ করেছেন যে, শামীম আল মামুন শহরের একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও একইভাবে ভ্যাট সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে ঘুষ দাবি করেছিলেন এবং ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করছিলেন। হবিগঞ্জে যোগদানের পর থেকে তার এমন অনৈতিক কার্যক্রম চলছিল।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এন এম সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী ওই ভ্যাট কর্মকর্তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে তাকে ছেড়ে দিলেও তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।