শাকিব খান, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম সফল অভিনেতা, যিনি ‘অনন্ত ভালোবাসা’ (১৯৯৯) চলচ্চিত্রে অভিষেক করেছিলেন। শাকিবের অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল একেবারে ছোট পারিশ্রমিক নিয়ে, কিন্তু ২০০৬ সালে ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবির মাধ্যমে তিনি প্রথম ব্লকবাস্টারের স্বাদ পান। এরপর ‘চাচ্চু’, ‘দাদীমা’ এবং ‘পিতার আসন’-এর মতো ছবির সফলতায় তাঁর পারিশ্রমিক ক্রমশ বাড়তে থাকে। ২০০৮ সালে তিনি প্রথম ৪০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন, এবং এরপর এই পরিমাণ দ্রুত বাড়তে থাকে। বর্তমানে শাকিব খানের পারিশ্রমিক দেড় কোটি টাকা প্রতি সিনেমা, যা ঢালিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক।
আরিফিন শুভ
আরিফিন শুভ, যিনি র্যাম্প মডেলিং থেকে চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন, ২০১৪ সালে ‘অগ্নি’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পরিচিতি পান। এরপর ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বর্তমানে শুভ প্রতি ছবিতে ১৫-২০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন, যদিও কিছু সময় তা ওঠানামা করে থাকে।
শরীফুল রাজ
মডেলিং এবং বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়া শরীফুল রাজ ‘ন ডরাই’ এবং ‘পরাণ’ ছবির মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। বর্তমানে তিনি প্রতি ছবিতে ১৫-২০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন, এবং কিছু সময় ২৫ লাখ টাকা পর্যন্তও হতে পারে। তাঁর সাম্প্রতিক কাজের মধ্যে ‘হাওয়া’ এবং ‘গুণিন’ উল্লেখযোগ্য, যা তাকে আরও বড় তারকায় পরিণত করেছে।
আফরান নিশো
আফরান নিশো, যিনি টিভি নাটকে কাজ শুরু করেছিলেন, চলচ্চিত্রে প্রথম ‘সুড়ঙ্গ’ ছবির মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেন। বর্তমানে, তাঁর পারিশ্রমিক ২০-২৫ লাখ টাকার মধ্যে, যা তাঁর জনপ্রিয়তা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
সিয়াম আহমেদ
সিয়াম আহমেদ, যিনি ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে বিনোদন জগতে কাজ করছেন, ‘পোড়ামন ২’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। তাঁর পারিশ্রমিক বর্তমানে ৮-১২ লাখ টাকার মধ্যে, যদিও ছবির বাজেট এবং অন্যান্য উপাদানের উপর নির্ভর করে এটি বদলাতে পারে। তাঁর সাম্প্রতিক কাজের মধ্যে ‘বিশ্বসুন্দরী’ এবং ‘অন্তর্জাল’ উল্লেখযোগ্য।
জিয়াউল রোশান
জিয়াউল রোশান, যিনি ৯ বছর ধরে চলচ্চিত্রে কাজ করছেন, ‘রক্ত’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। বর্তমানে তিনি প্রতি ছবিতে ৮-১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন। তাঁর আগত ছবির মধ্যে ‘পুলসিরাত’ এবং ‘জামদানি’ উল্লেখযোগ্য।
ইমন
ইমন, যিনি মডেলিং এবং টিভি নাটকে কাজ করে চলচ্চিত্রে আসেন, বর্তমানে ছবিপ্রতি ৫-৭ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন। তাঁর অভিনীত ‘দারুচিনি দ্বীপ’ এবং ‘লালটিপ’ ছবিগুলি দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়।
নিরব
নিরব, যিনি মডেলিং থেকে চলচ্চিত্রে আসেন, বর্তমানে ৭-১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন। তাঁর সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ছিল ১৫ লাখ টাকা, যা ‘বাংলাশিয়া’ ছবিতে হয়েছিল। বর্তমানে, তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে কাজ করছেন, যার মধ্যে ‘গোলাপ’ উল্লেখযোগ্য।
আদর আজাদ
আদর আজাদ, যিনি রিয়ালিটি শোয়ের মাধ্যমে শোবিজে আসেন, বর্তমানে ৩-৫ লাখ টাকার মধ্যে পারিশ্রমিক নেন। তাঁর কাজের মধ্যে ‘পিনিক’ এবং ‘টগর’ ছবিগুলি উল্লেখযোগ্য।
বাপ্পী চৌধুরী ও সাইমন সাদিক
বাপ্পী চৌধুরী এবং সাইমন সাদিক, যাঁরা ডিজিটাল যুগে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, বর্তমানে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত। এক সময় তারা প্রতি ছবিতে ১০-১২ লাখ এবং ৭-১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন, কিন্তু বর্তমানে তারা চলচ্চিত্রে কমই কাজ করেন।
বাংলাদেশি চলচ্চিত্র শিল্পে অভিনেতাদের পারিশ্রমিকের এই উত্থান-পতন, তাদের জনপ্রিয়তা এবং চলচ্চিত্রের বাজারের সাথে সম্পর্কিত। প্রতিটি অভিনেতার ক্যারিয়ারের ধারা ও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী তাদের পারিশ্রমিক বদলাতে থাকে, তবে শাকিব খান এখনও ঢালিউডে শীর্ষস্থানীয় তারকা হিসেবে রয়ে গেছেন।